ইসলামী ইতিহাস
যখন কেউ কল্পনাও করতে পারতো না যে, মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন লোক যে-ব্যক্তির সঙ্গী-সাথী হয়েছে, তাঁর আওয়াজ ছড়িয়ে পড়বে সারা দুনিয়ায়। ঠিক তখনই আল্লাহ তাআলা সূরা আল ইনশিরাহে ঘোষণা দিলেন—“আর আমি তোমার জন্য তোমার সুনাম বৃদ্ধি করেছি।" তারপর পৃথিবী দেখল কিভাবে আল্লাহ তাআলা তার সকল অনন্য উপায়ে এটি বাস্তবায়ন করেছেন।
সর্বপ্রথম তিনি রাসূল ﷺ-এর নামডাক ও চর্চা ব্যাপক করার কাজ করালেন তাঁর শত্রুদের দিয়েই। কীভাবে? রাসূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডার অংশ হিসেবে মক্কার কাফিররা একটি ‘বুদ্ধি’ এঁটেছিল—হজ্জের সময় আরবের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল-সংখ্যক লোক মক্কায় জমা হতো। তখন তারা হাজীদের প্রত্যেকটি তাঁবুতে গিয়ে বলতো, এখানে ‘মুহাম্মাদ’ নামে এক ভয়ংকর লোকের আবির্ভাব হয়েছে। সে লোকদের ওপর জাদু করে। ফলে পিতা-পুত্র, ভাই-ভাই ও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ফাটল ধরে, বিচ্ছেদ হয়। কাজেই তাঁর সংস্পর্শ থেকে আপনারা দূরে থাকবেন। তখন লোকদের মনে প্রশ্ন জাগলো, লোকটি কে? কী তাঁর পরিচয়? তিনি কেন এমনটা করেন? তারপর অনুসন্ধানে নেমে লোকেরা তাঁকে জেনেছে। যতোই জেনেছে, ততোই মুগ্ধ হয়েছে। দুর্নামের বদলে হয়েছে সুনাম। এভাবে দিন-দিন আরবের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও তাঁর চর্চা হতে লাগলো। এরপর নবিজি ﷺ মদীনায় হিজরত করলেন। সেখানে এমন অনন্য এক জীবন-ব্যবস্থা পেশ করলেন, যা মানুষের হৃদয় জয় করে নিলো।
মাত্র দশ বছরের মধ্যেই নবি ﷺ-এর খ্যাতির কথা সমগ্র আরবে সমুন্নত হয়ে গেল। চারিদিকে “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ”-এর ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হতে লাগল।
তারপর খোলাফায়ে রাশেদার শাসনামল থেকে নবিজির মুবারক নাম উচ্চারিত হতে লাগল সারা দুনিয়ায়। এই সিলসিলাটি আজও পর্যন্ত বেড়েই চলছে। ইন শা আল্লাহ, কিয়ামাত পর্যন্ত বাড়তেই থাকবে। এখন দিন-রাতের এমন একটুখানি সময়ও ফাঁকা পাওয়া যাবে না, যখন সারা দুনিয়ার কোথাও-না-কোথাও তাঁর মুবারক নাম পাঠ করা হচ্ছে না!
নতুন আইডিয়ারনীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url